
জনাব এম আযীযুল হক
জনাব এম আযীযুল হক বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকিং ও ফাইন্যান্স ক্ষেত্রে অনবদ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘সেন্ট্রাল শরীয়াহ্ বোর্ড ইসলামী ব্যাংকিং অ্যাওয়ার্ড -২০০৫ লাভ করেন। তিনি সোনালী ব্যাংক স্টাফ কলেজে দীর্ঘ ১২ বছর প্রিন্সিপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাছাড়া খন্ডকালীন অধ্যাপক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদে ১০ বছর শিক্ষকতা করেন। বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকিং ও ফাইন্যান্স জগতের পুরোধা জনাব এম আযীযুল হক ছিলেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের প্রথম সিইও। এ ছাড়াও তিনি সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড ও ইসলামিক ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। বর্তমানে তিনি ইসলামী ব্যাংকিং কনসালটেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ব্যাংক এশিয়া, ঢাকা ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, সিটি ব্যাংক ও ইসলামিক ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের শরী‘আহ্ সুপারভাইজরি কমিটির চেয়ারম্যান এবং সেন্ট্রাল শরীয়াহ্ বোর্ডের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।

জনাব শাহ্ আব্দুল হান্নান
জনাব শাহ্ আব্দুল হান্নান ‘সেন্ট্রাল শরীয়াহ্ বোর্ড ইসলামী ব্যাংকিং অ্যাওয়ার্ড—২০০৬’ লাভ করেন। তিনি এনবিআর—এর সদস্য, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর, অ্যান্টি কোরাপশন ব্যুরোর মহাপরিচালকসহ সচিব হিসেবে সরকারের বিভিন্ন বিভাগে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান থাকাকালে সেন্ট্রাল শরীয়াহ্ বোর্ড প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন এবং নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ও ফিক্বহ কমিটির সদস্য হিসেবে অনবদ্য ভূমিকা পালন করেন। তিনি ইসলামিক ব্যাংকস কনসালটেটিভ ফোরামের চেয়ারম্যান ছিলেন এবং বেশ কয়েকটি ব্যাংকের শরী‘আহ্ সুপারভাইজরি কমিটির চেয়ারম্যান ও সদস্য হিসেবে ইসলামী ব্যাংকিং ও শরী‘আহ্ বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এ ছাড়াও তিনি বিভিন্ন বীমাপ্রতিষ্ঠানের শরীয়াহ্ বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ‘মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ট্রাস্ট’, ইসলামিক ইকোনোমিক রিসার্চ ব্যুরো, সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড পিস স্টাডিজ ও ‘বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক থ্যট’ —এর চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি ‘সেন্ট্রাল শরীয়াহ্ বোর্ড ফর ইসলামিক ব্যাংকস অব বাংলাদেশ’ ও ‘ইসলামিক ব্যাংকস কনসালটেটিভ ফোরাম’—এর উপদেষ্টা।
তিনি ইসলামী ও আন্তর্জাতিক বিষয়াদির ওপর ডজনাধিক গ্রন্থ রচনা করেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থাবলির মধ্যে রয়েছে— ‘ইসলামী অর্থনীতি: দর্শন ও কর্মকৌশল’, ‘নারী, ইসলাম ও বাস্তবতা’, ‘উসুলুল ফিক্বহ’, ‘আমার জাতি আমার চিন্তা’, ‘Social Laws of Islam’ ইত্যাদি। এ ছাড়াও সামাজিক, রাজনৈতিক ও সমসাময়িক বিষয়াবলির ওপর লিখিত তাঁর বিভিন্ন প্রবন্ধ—নিবন্ধ রয়েছে।

মুফতী আব্দুর রহমান
মুফতী আব্দুর রহমান ১৯২৫ ঈসায়ী সালে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ইমামনগর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসা থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা সমাপ্ত করে পরবতীর্তে ভারতের দারুল উলূম দেওবন্দ থেকে দাওরায়ে হাদীস এবং ইফতা ডিগ্রি লাভ করেন। কর্মজীবনে তিনি চট্টগ্রামের পটিয়া ও বগুড়ার জামিল মাদরাসাসহ বিভিন্ন দীনি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেন। তিনি ঢাকার বসুন্ধরাস্থ ‘ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার’ ও রিভারভিউস্থ ‘জামিয়াতুল আবরার’—এর প্রতিষ্ঠাতা মহাপরিচালক ছিলেন। এছাড়াও তিনি ‘মারকাযুল ইকতিসাদ আল—ইসলামী’ প্রতিষ্ঠায় মুখ্য ভূমিকা পালনের পাশাপাশি ‘তানযীমুল মাদারিস আদ—দ্বীনিয়া’ (উত্তরবঙ্গ কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড)—এর সভাপতি এবং বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ছিলেন।
মুফতী আব্দুর রহমান ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ১ম শরী‘আহ্ কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। তা ছাড়া তিনি আল—আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড ও ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের শরী‘আহ্ সুপারভাইজরি কমিটির চেয়ারম্যান এবং সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের শরী‘আহ্ সুপারভাইজরি কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি কিছুদিন দি ওরিয়েন্টাল (বর্তমান আইসিবি ইসলামী) ব্যাংক লিমিটেডের শরী‘আহ্ অ্যাডভাইজার ছিলেন। সেন্ট্রাল শরীয়াহ্ বোর্ডের প্রতিষ্ঠালগ্ন (২০০১ ঈসায়ী সাল) থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত তিনি ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেন্ট্রাল শরীয়াহ্ বোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মাওলানা উবায়দুল হকের মৃত্যুর পর ২২ জুলাই ২০০৮ সালে সেন্ট্রাল শরীয়াহ বোর্ডের উপ—নির্বাচনে তিনি চেয়ারম্যান নিবার্চিত হন এবং ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত চেয়ারম্যান হিসেবে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। একই সাথে ২০০৪ সাল থেকে তিনি সেন্ট্রাল শরীয়াহ্ বোর্ডের ফিক্বহ কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
ইসলামী অর্থনীতি ও ব্যাংকিংবিষয়ক সেমিনারে অংশগ্রহণসহ বিভিন্ন কাজে তিনি সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, কাতার, ভারত ও পাকিস্তান সফর করেন।
এ মহান মানুষটি ০০/০০/২০১৫ সালে তাঁর রবের সান্নিধ্যে পাড়ি জমান।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রথম ইসলামী শরী‘আহ্ভিত্তিক সুদমুক্ত ব্যাংক যা বহুমাত্রিক দীর্ঘ প্রচেষ্টার ফসলরূপে ১৯৮৩ সালের ৩০ মার্চ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। বর্তমানে এ ব্যাংকটি দেশের বেসরকারি সকল তফসিলী ব্যাংকের মধ্যে সর্ববৃহৎ এবং সফল ব্যাংকের মর্যাদায় সমাসীন। এর পাশাপাশি ব্যাংকটি টেকসই অন্তর্ভুক্তিমূলক সুষম প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। বিশ্বের শীর্ষ ১০০০ ব্যাংকের মধ্যে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাংক।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড একের পর এক সাফল্যের মধ্য দিয়ে দেশের শ্রেষ্ঠ ব্যাংকে পরিণত হয়েছে। ব্যাংক ৩০১টি শাখার বিস্তৃত নেটওয়ার্ক-এর মাধ্যমে তার সেবাকে জনগণের দোর গোড়ায় পৌঁছিয়ে দিচ্ছে যার প্রত্যেকটিই অনলাইন সেবার আওতায় রয়েছে। প্রায় ৪ হাজার শেয়ার্ড এবং নিজস্ব ৪৯০টি এটিএম, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কল সেন্টার, এম-ক্যাশ প্রভৃতি আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর সেবার মাধ্যমে ব্যাংক তার এককোটিরও অধিক গ্রাহকের খেদমতে নিয়োজিত আছে। এই ব্যাংকের সাড়ে ১৩ হাজার কর্মী জাতি-ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে দেশের সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষের সেবায় নিবেদিত রয়েছেন।
বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকের মোট আমানতের পরিমাণ ৬০ হাজার ৪০০ কোটি যার বাজার অংশ ৯%, মোট বিনিয়োগ ৪৯ হাজার ৩০০ কোটি যার বাজার অংশ ৯%। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাংক সার্বিক জনকল্যাণ, দেশের অবহেলিত অঞ্চলের উন্নয়নসহ দেশের সার্বিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়েছে। ব্যাংক তার মোট বিনিয়োগের ৩২% শিল্প খাতে ব্যয় করেছে। ব্যাপক শিল্পায়নের পাশাপাশি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ২৬ লক্ষ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে। তৈরি পোশাক শিল্পের উন্নয়নে পথিকৃতের ভূমিকা পালনের মাধ্যমে দেশের শিল্প ভিত্তি তৈরি, উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে যার ফলে ব্যাংকওয়ার্ড লিংকেজ ও ফরোয়ার্ড লিংকেজ নানামুখী শিল্প-কারখানা গড়ে উঠেছে। এককভাবে আইবিবিএল-এর অর্থায়নে দেশে বর্তমানে চার হাজারের বেশি শিল্প কারখানা পরিচালিত হচ্ছে। বৃহৎ শিল্পের পাশাপাশি ইসলামী ব্যাংক ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে (এসএমই) অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিনিয়োগ করছে। দেশের মোট এসএমই বিনিয়োগের ১৭ শতাংশই ইসলামী ব্যাংকের যার সুবিধাভোগীর সংখ্যা ১ লাখেরও বেশি। এ ছাড়াও ব্যাংকের রয়েছে অনেকগুলি জনকল্যাণমুখী বিশেষ বিনিয়োগ প্রকল্প যা দেশের নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। গৃহায়ন বিনিয়োগ প্রকল্প, ডক্টরস প্রকল্প, পল্লী গৃহায়ন প্রকল্প, গৃহসামগ্রী প্রকল্প, নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রকল্প, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বিনিয়োগ প্রকল্প তার অন্যতম।
রেমিটেন্স বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখছে, আর এই রেমিটেন্স সংগ্রহে এককভাবে সর্বোচ্চ ২৬% অবদান ইসলামী ব্যাংকের। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যেও এ ব্যাংক শীর্ষস্থানীয়। আর্থিক অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে বঞ্চিত ও দরিদ্রের আত্মকর্মসংস্থান ইসলামী ব্যাংকিং-এর গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম। এ লক্ষ্যে ইসলামী ব্যাংক বৈচিত্র্যময় সব ব্যাংকিং হিসাব চালু করেছে যার মাধ্যমে ব্যাংকব্যবস্থার বাইরে থাকা বিপুল জনগোষ্ঠিকে ব্যাংকিং-এর আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে প্রায় ১ কোটির অধিক গ্রাহকের মধ্যে একলক্ষ স্টুডেন্ট হিসাব, ১.৫০ লক্ষ কৃষক হিসাব যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে হজ্জ্ব, ওয়াকফ্ ও মোহর হিসাবের মত কল্যাণমুখী বহু হিসাব।
ইসলামী ব্যাংক গ্রামীণ দারিদ্র্য দূরীকরণে ১৯৯৫ সালে পল্লিউন্নয়ন প্রকল্প (আরডিএস) নামে ইসলামী পদ্ধতির মাইক্রো ফাইন্যান্স প্রকল্পের কাজ শুরু করে। এ কার্যক্রমের আওতায় গ্রামীণ কৃষি, মাছ চাষ, জীবিকা, যোগাযোগ, আবাসন, বনায়ন প্রভৃতি ক্ষেত্রে এ যাবত দেশের ৬৪ জেলায় সাড়ে ১৮ হাজার গ্রামের ৯ লাখ ১৬ হাজার গ্রাহকের মাঝে সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। ২০১২ সাল থেকে ব্যাংক শহরের ভাসমান ও হতদরিদ্রদের জন্য আরবান পুওর ডেভেলপমেন্ট স্কিম (ইউপিডিএস) নামে কাজ শুরু করেছে। এ পর্যন্ত ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর ২৬০টি কেন্দ্রে ক্ষুদ্র বিনিয়োগ কার্যক্রম চলছে।
ইসলামী ব্যাংকের সার্বিক কার্যক্রম সর্বজনীন কল্যাণে নিবেদিত। ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রমের বাইরেও জনকল্যাণ নিশ্চিত করতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক উন্নয়ন, শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি ইত্যাদি কার্যক্রমে অবদান রাখছে। কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা খাতে ব্যাংক ২০১৪ সালে ৫২ কোটি টাকাসহ এ পর্যন্ত প্রায় ৩৫৩ কোটি টাকা ব্যয় করেছে যার উপকারভোগীর সংখ্যা এককোটি ২৩ লাখেরও বেশি।
ইসলামী ব্যাংকের রয়েছে নিজস্ব ট্রেনিং ইন্সটিটিউট। ইসলামী ব্যাংক ট্রেনিং এন্ড রিসার্চ একাডেমি (আইবিটিআরএ) তাদের নিজস্ব জনশক্তির পাশাপাশি অগ্রণী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তাদের জন্যও ফাউন্ডেশন কোর্স এবং প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে থাকে। শ্রীলংকার ‘ব্যাংক অব সিলোন’ ও উগান্ডা’র প্রস্তাবিত একটি ইসলামী ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জন্যও ব্যাংক ঢাকায় প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে। আইবিটিআরএ ইসলামী ব্যাংকিং-এর পেশাগত বিষয়ে জনশক্তিকে পারদর্শী করার জন্য ১৯৯৮ সাল থেকে ‘ইসলামী ব্যাংকিং ডিপ্লোমা’ (উওই) চালু করেছে।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড দেশ ও জাতির উন্নয়নে তার বহুমুখী কার্যক্রমের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনেকগুলো পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিশ্ববিখ্যাত ‘দি ব্যাংকার’ ম্যাগাজিন ২০১২ সালে বিশ্বের ১০০০টি সেরা ব্যাংকের তালিকায় বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাংক হিসেবে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডকে অন্তর্ভুক্ত করে। ধাপে ধাপে মানোন্নয়নের মাধ্যমে ২০১৫ সালে এই অবস্থান ৯৫৪তম স্থানে উন্নীত হয়।

এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেড
বাংলাদেশের অর্থনীতিকে গতিশীল করার এক অদম্য প্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে ‘এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেড’ জুন ২, ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে এবং আগস্ট ৩, ১৯৯৯ থেকে তার ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করে। প্রথমে একটি সুদভিত্তিক বাণিজ্যিক ব্যাংক হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও গ্রাহকদের চাহিদা এবং পরিচালনা পর্ষদের ঐকান্তিক ধর্মীয় মূল্যবোধের ফলশ্রæতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনক্রমে জুলাই ১, ২০০৪ থেকে কনভেনশনাল ব্যাংকিং পদ্ধতি হতে এক্সিম ব্যাংক একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ব্যাংকে রূপান্তরিত হয়, যা ব্যাংকিং ইতিহাসে সর্বপ্রথম রেকর্ড। সে সময় থেকে অত্যন্ত সুনামের সাথে ব্যাংকটি তার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ব্যাংকের সকল জনশক্তি ইসলামী ব্যাংকিং-এর নীতিমালাকে সামনে রেখে ব্যাংকটিকে অন্যতম একটি ইসলামী ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার প্রয়াসকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়েছে যার ফলশ্রæতিতে দেশ-বিদেশে আধুনিক ইসলামী ব্যাংক হিসেবে এক্সিম ব্যাংক তার অবস্থানকে মজবুত করেছে। তৃতীয় প্রজন্মের একটি ব্যাংক হিসেবে আবির্ভূত হয়ে এই ব্যাংক বর্তমানে প্রথম প্রজন্মের অনেক ব্যাংকের চেয়েও অগ্রগামী রয়েছে।
ইসলামী ব্যাংক হিসেবে রূপান্তরের প্রারম্ভ থেকেই এক্সিম ব্যাংক সর্বদা শরী‘আহ্সম্মতভাবে টেকসই আর্থিক সফলতা অর্জনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। শক্তিশালী মূলধন কাঠামো, সমন্বিত প্রচেষ্টা, বিস্তৃত শাখা, উদ্ভাবনী প্রকল্প, মানসম্মত সেবা, স্টেইকহোল্ডারদের সহযোগিতা ব্যাংকের তাৎপর্যপূর্ণ সফলতা অর্জনে সাহায্য করেছে। ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪ এ ব্যাংকের মোট মূলধন ২৩,৬৭৫.০২ মিলিয়ন টাকা। মোট আমানত ২০০,২৮১.৩৯ মিলিয়ন টাকা। মোট বিনিয়োগ ১৭৭,৯৩৬.৮৪ মিলিয়ন টাকা।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই উন্নত গ্রাহকসেবা, ব্যাংকিং সেবায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, যেমন- এটিএম সেবা, ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা, এসএমএস ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, চঙঝ সেবা, ইসলামী ভিসা কার্ড, ডেবিট কার্ড সেবা প্রদান করে আসছে এবং গ্রাহকদের সাথে আন্তরিক সম্পর্কের মাধ্যমে ব্যাংক উল্লেখযোগ্য আমানতের প্রবৃদ্ধির হার বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। তা ছাড়া বাস্তবধর্মী নীতিমালার আলোকে এক্সিম ব্যাংক ব্যাংকিং সুবিধাবঞ্চিত (টহ-ইধহশবফ) গ্রাহকবৃন্দকে নিত্য নতুন ব্যাংকিং পণ্য/সেবা প্রদান ও সেবার গুণগত মান বৃদ্ধির মাধ্যমে আকৃষ্ট করায় ব্রত আছে। এ লক্ষ্যে সরকারের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ (ঋরহধহপরধষ রহপষঁংরড়হ) প্রকল্পের আওতায় স্কুল ব্যাংকিং, ১০ (দশ) টাকায় কৃষকের হিসাব খোলা এবং অন্যান্য গ্রিনব্যাংকিং কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। শক্তিশালী অ্যাসেট পোর্ট-ফোলিও সংরক্ষণ ও বিনিয়োগ ঝুঁকির মাত্রা সহনীয় পর্যায়ে রাখার নিমিত্তে ব্যাংক অর্থনীতির বিদ্যমান এবং সম্ভাব্য প্রতিটি সেক্টরে বিনিয়োগ বিকেন্দ্রীকরণের জন্য সর্বদাই সচেষ্ট রয়েছে।
আমানতকৃত অর্থ শিল্পোন্নয়নে ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে মূলধনের যোগান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। একটি আধুনিক ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ইসলামী ব্যাংক হিসেবে সমাজের সকল গ্রাহককে আকৃষ্ট করার জন্য সার্বক্ষণিকভাবে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যসম্বলিত ব্যাংকিং পণ্য ও সেবার উদ্ভাবন অব্যাহত রেখেছে। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে ব্যাংক আল-ওয়াদিয়া ও মুদারাবা পদ্ধতির নানামুখী প্রচলিত ও নিত্য নতুন প্রডাক্ট-এর অনুশীলন করে যাচ্ছে, যা গ্রাহকগণের জমাকৃত আমানতসমূহকে বৈচিত্রময় স্কিমের মাধ্যমে তাদের কাক্সিক্ষত মুনাফা অর্জনে সহায়ক।
এক্সিম ব্যাংক গ্রাহকদের আমানত যথাযথভাবে সংগ্রহ করে শরী‘আহ্সম্মত বিনিয়োগ পদ্ধতির মাধ্যমে মুনাফা অর্জনে সচেষ্ট। এ ক্ষেত্রে ব্যাংক দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে সব ধরনের শরী‘আহ্সম্মত খাতে বিনিয়োগ করে যাচ্ছে। এ বিনিয়োগের মাধ্যমে ব্যাংক একদিকে দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পের উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখছে। অপরদিকে, দেশের এক বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকার সুব্যবস্থা করছে। দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তনের সাথে সঙ্গতি রেখে বিনিয়োগ পোর্ট-ফোলিওকে ঢেলে সাজানোর বিষয়ে ব্যাংক অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।
প্রবাসী বাংলাদেশীদের রেমিটেন্স সেবা প্রদান করার লক্ষ্যে এবং তাদের কষ্টার্জিত অর্থ বৈধ উপায়ে বাংলাদেশে প্রেরণের জন্য এক্সিম ব্যাংক সম্পূর্ণ নিজস্ব মালিকানাধীন দুইটি সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান (১) এক্সিম এক্সচেঞ্জ কোম্পানি (ইউকে) লিমিটেড, লন্ডন, যুক্তরাজ্য এবং (২) এক্সিম এক্সচেঞ্জ কোম্পানি (কানাডা) লিমিটেড, টরেন্টো, কানাডা প্রতিষ্ঠা করেছে। তা ছাড়া রেমিটেন্স সেবা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এক্সিম ব্যাংক পৃথিবীর অনেক মানি ট্রান্সফার কোম্পানির সাথে ড্রয়িং ব্যবস্থা স্থাপন করেছে।
বৈদেশিক বাণিজ্য উন্নয়নের জন্য প্রতিসঙ্গী ব্যাংকসমূহের সাথে সুসম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এক্সিম ব্যাংক এ পর্যন্ত বিশ্বের ১০৫ টি দেশের ৩৭৪ টি ব্যাংকের ১৭,০৫৫ টি শাখার সাথে প্রতিসঙ্গী ব্যাংকিং সম্পর্ক স্থাপন করেছে। এ ছাড়া বিশ্বব্যাংকের সদস্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) এবং এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)-এর সাথে চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে ব্যাংক তার অনুমোদিত ঋণপত্রের বিপরীতে ক্রেডিট লিমিট সুবিধা ভোগ করছে।
এক্সিম ব্যাংক ২০০৮ সাল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনাকে সামনে রেখে এমএসএমই সেবা প্রদানের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের এই চালিকাশক্তির সাথে যুক্ত হয়। এ খাত স¤প্রসারণে এক্সিম ব্যাংক বর্তমানে দেশব্যাপী বিস্তৃত ৯৭টি শাখার মাধ্যমে নিবেদিত সুদক্ষ কর্মীবাহিনী দ্বারা সেবা প্রদানের নিরন্তর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে বিনিয়োগের মাধ্যমে এক্সিম ব্যাংক দেশের গ্রামীণ অর্থনীতিকে মজবুত এবং সমাজের অবহেলিত ও অর্থনৈতিক কর্মকাÐে পশ্চাৎপদ নারী উদ্যোক্তাদের বিশেষ প্রণোদনার মাধ্যমে অর্থনৈতিক কর্মকাÐে সম্পৃক্ত করার ব্যাপারে ব্রত আছে। এ ব্যাপারে ব্যাংক দেশের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে বিনিয়োগের পরিচালন ব্যয় এবং এ খাত থেকে অর্জিত নিট মুনাফার বিষয়টি অত্যন্ত উদারভাবে বিবেচনা করে। ফলে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা, পুষ্টি নিশ্চিতকরণ, দারিদ্র্য বিমোচন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে প্রশংসনীয় অবদান রাখছে। সূচনালগ্ন হতে এক্সিম ব্যাংক কৃষি খাতে বিনিয়োগ প্রদান করে আসছে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় আনুষ্ঠানিকভাবে ২০০৮-০৯ অর্থবছর থেকে এক্সিম ব্যাংক পৃথক লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কৃষি ও পল্লীখাতে বিনিয়োগ বিতরণ শুরু করেছে। এক্সিম ব্যাংক ২০১২-২০১৩ এবং ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরে কৃষি ও পল্লীবিনিয়োগ বিতরণ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর মহোদয় থেকে “লেটার অব অ্যাপ্রিসিয়েশন” পেয়েছে।
এক্সিম ব্যাংক বর্তমানে বিশ্ববিখ্যাত কোর ব্যাংকিং সফটওয়ার ঞবসবহড়ং ঞ২৪ ব্যবহার করছে যার মাধ্যমে গ্রাহকদের বহুমাত্রিক সেবা প্রদান করার পাশাপাশি দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায়িক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারছে। সারা দেশব্যাপী ব্যাংকের ৬৫টি এটিএম বুথের সমম্বয়ে নিজস্ব এটিএম নেটওয়ার্ক রয়েছে, যার মাধ্যমে গ্রাহকগণ বিরামহীনভাবে লেনদেনের সুবিধা পাচ্ছেন। এক্সিম ব্যাংকের এটিএম নেটওয়ার্ক ছ-ঈধংয নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত থাকার কারণে ব্যাংকের ডেবিট কার্ডধারীগণ অন্যান্য ২২টি ব্যাংকের বুথে কার্ড ব্যবহার করতে পারছেন। এ ছাড়াও ঘচঝই-এর মাধ্যমে এক্সিম ব্যাংকের ডেবিট কার্ডধারীগণ এখন সরাসরি ৩৮টি ব্যাংকের প্রায় ৪,০০০ এটিএম বুথ ব্যবহার করতে পারেন। এক্সিম ব্যাংকের ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবাকে নতুনভাবে নব আঙ্গিকে অওঝঊজ ব্র্যান্ড নামকরণ করা হয়েছে, যার মাধ্যমে গ্রাহকরা তাৎক্ষণিকভাবে তাদের হিসাবসংক্রান্ত যেকোনো তথ্য অবহিত হতে পারেন। ব্যাংকটি তার স্বপ্রণোদিত প্রচেষ্টায় ঊঢওগ মড়অগখ ওহঃবৎভধপব ্ অহঃর-গড়হবু খধঁহফবৎরহম টঃরষরঃু ঝড়ভঃধিৎব ও ইঅঝঊখ-ওও বাস্তবায়নের জন্য বিশেষায়িত ইঁংরহবংং ওহঃবষরমবহপব (ইও) সফটওয়ার তৈরি করেছে যেখানে বিভিন্ন রিপোর্ট তৈরি করা ছাড়াও অর্থনৈতিক পূর্বাভাস ও পরিকল্পনা তৈরি এবং বিনিয়োগকালীন ঝুঁকি মূল্যায়ন করা সম্ভব হচ্ছে।
দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং ব্যবসা প্রসারের লক্ষ্যে শাখা স¤প্রসারণ ব্যাংকের একটি নিয়মিত কার্যক্রম। এরই ধারাবাহিকতায় সারা দেশে বর্তমানে ৯৭টি শাখা প্রতিনিয়ত গ্রাহকসেবা দিয়ে যাচ্ছে।

অধ্যক্ষ সাইয়্যেদ কামালুদ্দীন আব্দুল্লাহ্ জাফরী
অধ্যক্ষ সাইয়্যেদ কামালুদ্দীন জাফরী। তাঁর পিতার নাম সাইয়্যেদ আবু জাফর আব্দুল্লাহ্। তিনি ৫ মার্চ, ১৯৪৫ ঈসায়ী সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি প্রথম শ্রেণীতে হাদীস শাস্ত্রে ‘কামিল’ ডিগ্রি অর্জন করেন, যা এমএ সমমানের। তিনি মক্কাস্থ উম্মুল ক্বুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আরবি ভাষা ইনস্টিটিউট থেকে আরবি ভাষায় ডিস্টিংশনসহ উচ্চতর ডিপ্লোমা ডিগ্রি লাভ করেন।
তিনি মাতৃভাষা বাংলাসহ আরবি, উর্দূ, ফার্সি ও ইংরেজি ভাষায় পারদর্শী। তাঁর পেশাগত ও প্রশাসনিক জীবন গৌরবের দীপ্তিতে ভাস্বর। তিনি যেসব বিষয়ে শিক্ষকতা করেছেন সেগুলো হল- তাফসীর, সহীহ আল-বুখারী, আবু দাউদ, তিরমিযী, আক্বীদাসংক্রান্ত বিষয়, তাওহীদ, আরবি ও উর্দূ ভাষা।
তিনি ২৬ বছর জামেয়া কাসেমিয়ার প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান। তিনি ‘সেন্ট্রাল শরীয়াহ্ কাউন্সিল ফর ইসলামিক ইনস্যুরেন্স অব বাংলাদেশ’-এর চেয়ারম্যান। এটিএন বাংলা টিভি চ্যানেলের উপদেষ্টা ও ইসলামী অনুষ্ঠানের ভাষ্যকার। তিনি ‘সেন্ট্রাল শরীয়াহ বোর্ড ফর ইসলামিক ব্যাংকস অব বাংলাদেশ’-এর বর্তমান চেয়ারম্যান। এ ছাড়া তিনি বিভিন্ন বীমা, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং ইয়াতিমখানা ও মসজিদের সাথে বিভিন্ন পদে অধিষ্ঠিত থেকে দেশ, জাতি ও মানবতার সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন। তিনি গবেষণা ক্ষেত্রেও সাফল্যের সাথে পদচারণা করছেন। ইসলামী ব্যাংক ও ইসলামী বীমা কোম্পানিগুলোতে শরী‘আহ্ অনুশীলন তদারকির গুরুত্বের ওপর প্রবন্ধমালা উপস্থাপন করেছেন। ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সেমিনারে পেশকৃত তাঁর বেশ কয়েকটি প্রবন্ধ স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
ঢাকায় অনুষ্ঠিত একটি জাতীয় সেমিনারে উপস্থাপিত তাঁর প্রবন্ধের শিরোনাম ছিল- ‘ইসলামী সমাজ থেকে দারিদ্র্য দূরীকরণে যাকাতের ভূমিকা ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন’, যা ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড কর্তৃক প্রকাশিত ও পরিবেশিত হয়। এ ছাড়াও তাঁর আরো গুরুত্বপূর্ণ রচনাবলি রয়েছে। তিনি কয়েকটি গ্রন্থ সম্পাদনা ও পরিমার্জন করেছেন। এগুলোর মধ্যে সবিশেষ উল্লেখযোগ্য হল- কিতাবু হুকমির রিদ্দাহ ফিল ইসলাম, মাবাদিউস সিয়াসাহ ফিল ইসলাম প্রভৃতি।
তিনি দাওয়াহ ও ইসলাম প্রচারের ক্ষেত্রেও অসামান্য অবদান রেখেছেন। তিনি ‘মাজলিসুল ইসলাহ বাংলাদেশ’ নামে একটি ইসলামিক এনজিওর চেয়ারম্যান। বর্তমানে তিনি শরী‘আহ্সংক্রান্ত বিষয়ে উদ্ভূত বিভিন্ন সমস্যার বাস্তবসম্মত সমাধানের আলোচনা করে থাকেন। তাঁর এ আলোচনা ‘এটিএন বাংলা’ চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। ইতঃপূর্বেও তিনি দেশি-বিদেশি বেতারের সাথে যুক্ত ছিলেন।
তিনি বিভিন্ন ইসলামী সেমিনার ও অর্থনীতিবিষয়ক সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইটালিসহ বহু দেশ ভ্রমণ করেছেন।

জনাব মুঃ ফরীদ্ উদ্দীন আহমাদ
জনাব মুঃ ফরীদ উদ্দীন আহমাদ বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলাধীন ঠাকুরমল্লিক গ্রামে ১৯৪৭ সালের ২৫ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম মফিজুর রহমান স্কুলশিক্ষক এবং মাতা মরহুমা নুরুন নাহার গৃহিণী ছিলেন। জনাব মুঃ ফরীদ উদ্দীন আহমাদ ১৯৬৩ সালে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় মেধাতালিকায় স্থান পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে পরবর্তীতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাণিজ্য বিভাগে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ব্যাংকিং পেশায় যোগদানের পর তিনি বিশ্বব্যাংকের কার্যক্রমের আওতায় ম্যানেজমেন্ট ও ব্যাংকিং বিষয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণ লাভ করেন। ইরানের তেহরান ও বাবলশহরে অনুষ্ঠিত ইসলামী অর্থনীতি ও ইসলামী ব্যাংকবিষয়ক আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ কোর্সেও জনাব ফরীদ অংশগ্রহণ করেন। দি ইনস্টিটিউট অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ থেকে তিনি প্রফেশনাল ডিগ্রি অর্জন করেন।
তাঁর কর্মজীবন শুরু হয় দেশের প্রচলিত ধারায় পরিচালিত সোনালী ব্যাংকে। পরবর্তীকালে তিনি সোনালী ব্যাংকের স্টাফ কলেজে ফ্যাকাল্টি মেম্বার হিসাবে যোগদান করেন। এ কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ জনাব এম. আযীযুল হকের উদ্যোগে ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকান্ডের সাথে জনাব ফরীদ উদ্দীন আহমাদ নিজেকে গভীরভাবে সম্পৃক্ত করে ইসলামী অর্থনীতিবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান, ইসলামিক ইকোনোমিক্স রিসার্চ ব্যুরোর সাথে সংযুক্ত হয়ে ইসলামিক ব্যাংকিং ও অর্থনীতি সম্পর্কে জ্ঞানের প্রসার ঘটান। ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকিং-এর যাত্রা শুরুর পূর্ববর্তী পাঁচবছর জনাব ফরীদ উদ্দীন আহমাদ বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংকার্স আয়োজিত প্রায় সকল প্রশিক্ষণ কোর্সের কো-অর্ডিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জনাব ফরীদ বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন-এর সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় তিনি প্রখ্যাত ইসলামী অর্থনীতিবিদ এম. উমর চাপড়া, ড. নাজাতুল্লাহ সিদ্দিকী, ড. মনোয়ারা ইকবাল, জনাব খুরশিদ আহমাদ ও বিচারপতি তাক্বী উসমানীর লেখা পুস্তকাদি গভীর মনোনিবেশ সহকারে অধ্যয়ন করেন। মুঃ ফরীদ উদ্দীন আহমাদ প্রশিক্ষক ও প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে দেশে-বিদেশে অনেক সেমিনার, আলোচনা সভা ও ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণ করেছেন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রথম ইসলামী ব্যাংক ‘ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড’ ৩০ মার্চ, ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠা লাভের সূচনালগ্নে জনাব ফরীদ অপারেশন ম্যানেজার হিসেবে যোগদান করেন। তিনি ইসলামী ব্যাংকিং সিস্টেমের ডিজাইন, টেস্টিং এবং ইমপ্লিমেনটিংয়ের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি অ্যাকাউন্টিং, ফিন্যান্স, ইনভেস্টমেন্ট, অপারেশন এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ম্যানুয়াল রচনা করে ইসলামী ব্যাংকিংকে সমৃদ্ধ করেন। তিনি ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লি.-এর শরী‘আহ্ কাউন্সিলের সাথে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডে তিনি ফিন্যান্স, ইনভেস্টমেন্ট, ট্রেজারি, অপারেশন অ্যান্ড ইন্টারনাল কন্ট্রোল অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স উইং-এর প্রধান হিসেবে কাজ করেন। এছাড়া ব্যাংকের ট্রেনিং অ্যান্ড রিসার্চ একাডেমির প্রিন্সিপাল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
জনাব মুঃ ফরীদ উদ্দীন আহমাদ ২০০৭ থেকে ২০১০ পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লি.-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সি.ই.ও-এর দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে তিনি এবি ব্যাংক লিমিটেডের ইসলামী ব্যাংকিং উইং-এর প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালের আগস্ট মাসে তিনি এক্সিম ব্যাংকে ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সি.ই.ও হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে এক্সিম ব্যাংকের উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
বর্তমানে তিনি দি সিটি ব্যাংক লি., আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক লি. ও দি প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেডের শরী‘আহ্ সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য। তিনি ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের শরী‘আহ্ সুপারভাইজরি কমিটিরও সদস্য ছিলেন। ব্যাংকিং খাতে নিরবচ্ছিন অবদানের জন্য তিনি স্যার সলিমুল্লাহ স্বর্ণপদক, সি আর দাস স্বর্ণপদকসহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদকে ভূষিত হন।
জ্ঞানপিপাসু জনাব ফরীদ উদ্দীন আহমাদ তাঁর কর্মজীবনে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, বাহরাইনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেন।

মোহাম্মদ আবদুল মান্নান
মোহাম্মদ আবদুল মান্নান-এর জন্ম ভাষা আন্দোলনের উত্তাল বছরে, বাংলাদেশের এক নিভৃত পল্লিতে, আড়াইহাজার থানার সত্যভান্দী গ্রামে।
১৯৮৩ সালে ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠার সময় সাংবাদিক থেকে ব্যাংকের জনসংযোগ কর্মী হয়ে ক’বছর দিনরাত একাকার। ১৯৮৮-তে ব্যাংকের মূল- স্রোতে প্রবেশ করে চৌদ্দ বছর বিভিন্ন শাখার ব্যবস্থাপকরূপে সুবিধা-বঞ্চিত নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া ব্যাংকিং বহির্ভূত মানুষকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনার চেষ্টা। এ সময় ক’বার শ্রেষ্ঠ শাখা ব্যবস্থাপকের সম্মাননা লাভ।
মোহাম্মদ আবদুল মান্নান নব্বইয়ের দশকের শেষ পাঁচ বছর উপসাগরীয় অঞ্চলে ইসলামী ব্যাংকের প্রতিনিধি ছিলেন। এ সময় তিনি সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, কাতার, ওমান ও বাহরাইনে প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছে ইসলামী ব্যাংকিং-এর পরিচয় তুলে ধরেন। তার চেষ্টায় উপসাগরীয় দেশগুলিতে হুন্ডির দৌরাত্ম্য কমে। ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ জোরদার হয়। ২০০০ সালে দেশে ফিরে তিনি একটি কর্পোরেট শাখার ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালনকালে রেমিট্যান্স বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক ‘রেফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট’ (রামরু)-র সাথে কাজ করেন। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা, বিমানবন্দরে প্রবাসীসেবা ডেস্ক স্থাপন ও ব্যাংকসমূহে প্রবাসী গ্রাহকসেবা উন্নয়নে রামরু এ সময় ভূমিকা পালন করে। এ সময়ই তার লেখা ‘সৌদি আরবে বাংলাদেশী অভিবাসী: একটি সরেজমিন সমীক্ষা’ বইটি রামরুর উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত হয়। প্রবাসীদের নিয়ে সামান্য কাজের অসামান্য স্বীকৃতি হিসেবে তিনি ২০১২ সালে পান ‘রেমিট্যান্স অ্যাম্বাসাডর অব বাংলাদেশ’ সম্মাননা।
২০০৫ সাল থেকে ইসলামী ব্যাংকের আন্তর্জাতিক উইং-এর প্রধান থাকাকালে মোহাম্মদ আবদুল মান্নান আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের শরী‘আহ্সম্মত প্রডাক্ট উন্নয়ন এবং বহির্বিশ্বে ইসলামী ব্যাংকিং-এর অন্তর্নিহিত শক্তি তুলে ধরতে কাজ করেন। ২০০৭ সালে তিনি ব্যাংকের বিনিয়োগ উইং-এর দায়িত্ব পেয়ে মাকাসিদে শরী‘আহ্র আলোকে বণ্টনমূলক, গ্রামমুখী ও প্রকৃত প্রয়োজনভিত্তিক বিনিয়োগ সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেন। শরী‘আহ্সম্মত পদ্ধতি শুধু নয়, শরী‘আহ্র লক্ষ্য বাস্তবায়নে ইসলামী ব্যাংকারদের কর্তব্য কী হবে, সে সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে তখন থেকেই তার কাজ শুরু হয়।
মোহাম্মদ আবদুল মান্নান ২০১০ সালে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব পান। তার কার্যকালে ইসলামী ব্যাংক দেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংকে পরিণত হয়। বিশ্বের পঁয়ষট্টিটি দেশের পাঁচশ’র বেশি ইসলামী ব্যাংকের মোট হিসাব সংখ্যার এক চতুর্থাংশই এখন পরিচালিত হচ্ছে এককোটির বেশি গ্রাহকধারী ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড-এর মাধ্যমে। ২০১২ সালে ইসলামী ব্যাংক বিশ্বসেরা একহাজার ব্যাংকের তালিকায় বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাংক হিসেবে স্থান পায়। ২০১১ সালে “আইসিএমএবি ন্যাশনাল বেস্ট করপোরেট অ্যাওয়ার্ড” এবং ২০১২ সালে “সাউথ এশিয়ান ফেডারেশন অব অ্যাকাউন্ট্যান্টস’’-এর মূল্যায়নে সার্ক অঞ্চলের শ্রেষ্ঠ ব্যাংকরূপে স্বীকৃতি পায় ইসলামী ব্যাংক। ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড একাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (ওঈঅই) ও ইন্সটিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ দেশের ব্যাংকসমূহের বার্ষিক প্রতিবেদন মূল্যায়নের ভিত্তিতে ২০১১ সাল থেকে পর পর ক’বছর ইসলামী ব্যাংককে শ্রেষ্ঠ ব্যাংকের সম্মাননা দিয়েছে। এ সময় এই ব্যাংক কয়েক বার পেয়েছে ‘বেস্ট রেটেড ব্যাংক অ্যাওয়ার্ড’। বাংলাদেশ ব্যাংক ও এসএমই ফাউন্ডেশন ইসলামী ব্যাংককে স্বীকৃতি দিয়েছে দেশের ‘শ্রেষ্ঠ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাবান্ধব ব্যাংক’রূপে। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিবিষয়ক ম্যাগাজিন “দি গেøাবাল ফাইন্যান্স” আইবিবিএল-কে বেশ ক’বার শ্রেষ্ঠ ইসলামী আর্থিক প্রতিষ্ঠানরূপে সম্মানিত করেছে। রেমিট্যান্স আহরণে অবদানের জন্য ইসলামী ব্যাংক গত ক’বছর স্বর্ণপদকসহ বিভিন্ন পুরস্কার ও স্বীকৃতি পেয়েছে।